লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের কলাখাওয়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মোজাম্মেল হক (৫৫) নামের এক দরিদ্র কৃষকের ১একর জমির পাটক্ষেত নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ওই এলাকার স্থানীয় ৫জনের বিরুদ্ধে লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক মোজাম্মেল হক তাঁর পৈতৃক জমিতে গত দুই বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। চলতি মৌসুমে তিনি ওই জমিতে তোষা জাতের পাট চাষ করেন। শুক্রবার (৬ জুন) বিকেলে জমি দেখে বাড়ি ফিরে যান তিনি। পর দিন শনিবার (৭ জুন) সকালে জমিতে গিয়ে দেখেন, সমস্ত পাট গাছ ঝলসে পড়ে আছে। পরে স্থানীয় কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের দাবি, প্রতিপক্ষরা রাতের আঁধারে অতিরিক্ত মাত্রায় বিষাক্ত কীটনাশক ছিটিয়ে পাট গাছগুলো নষ্ট করে দিয়েছে। এতে প্রায় ১লক্ষ ৬০হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
মোজাম্মেল হকের দায়ের করা অভিযোগে যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাঁরা হলেন- একরামুল হক (৩৬), রফিকুল ইসলাম (৩৮), খোকা মামুদ (৫৭), আসাদুল (৩২) এবং মাইদুল ইসলাম (৩০)। এরা সকলেই একই এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রতিপক্ষরা জমিটি জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং কৃষক মোজাম্মেল হককে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। জমিটি মৌজা কলাখাওয়া, খতিয়ান নং-২০৭, দাগ নং-১১৭ ও ১১৪ মোট ১০০শতক বলে দাবি করেছেন তিনি।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, পুরো জমির পাট গাছ ঝলসে গেছে। কিছু কিছু গাছে আংশিক পাতা থাকলেও তা থেকে কোনো উৎপাদনের আশা করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, অনেক কষ্ট করে ফসল লাগিয়েছিলাম। অথচ আমার সেই কষ্টের ফসল নষ্ট করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখন সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, সম্ভবত কেউ রাগের বশে অতিরিক্ত কীটনাশক ছিটিয়ে এ ক্ষতি করেছে। ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত।
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, ঘটনার দু’দিন আগেও পাট গাছগুলো সবুজ ছিল। হঠাৎ দেখলাম, সব গাছ জ্বলে গেছে। ফসল উৎপাদনের কষ্ট আমরা কৃষকরাই জানি। দোষীদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।